বদ্বীপ গঠনের নিয়ামক সমূহ বর্ণনা কর

প্রিয় পাঠক আপনারা কি বদ্বীপ গঠনের নিয়ামক সমূহ সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলে বদ্বীপ বলতে কি বুঝ এবং বদ্বীপ গঠনের নিয়ামক সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

বদ্বীপ গঠনের নিয়ামক সমূহ বর্ণনা কর
নদীর স্রোত সাগরে মিলিত হলে সংযোগস্থলে নদীর পানির সাথে আসা বালি, মাটি সাগরের লবণাক্ত পানি, রাসায়নিক ও বৈদ্যুতিক প্রক্রিয়ায় পলি জমে তা নদীর প্রবাহে বাধা তৈরি করে। নদীর প্রবাহ তখন জমে ওঠা পলি এড়িয়ে পাশে নতুন একটা শাখা পথে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। মাঝখানে জমে ওঠা ভূভাগকেই বদ্বীপ বলে।

ভূমিকা

গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস আড়াই হাজার বছর পূর্বে প্রথম বদ্বীপ সম্পর্কে ধারণা দেন। নদী বা কোনো পানির প্রবাহ যখন হ্রদে বা সাগরে পতিত হয়, তখনই বদ্বীপ তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু হয়। হ্রদ বা সাগরে পৌঁছেই নদীর স্রোত না থেমে সাগরের ভেতরে গিয়ে এক পর্যায়ে থামে।স্রোত থামলে সেখানে সাগরের স্রোত কিছুটা স্থির হলে স্রোতের সাথে আসা বালি, মাটি সেখানে জমতে থাকে। বদ্বীপ প্রবাহের স্রোতের গতি থাকে খুবই কম।এতে বালি ও কাদা, মাটি জমে নতুন জমি তৈরি করে।আর এই 'ব'-এর এক দিকে সমুদ্রের পানি, দুই দিকে থাকে নদীর পানি। মধ্যভাগের স্থলভাগটিই বদ্বীপ।এটি দেখতে বাংলা বর্ণমালা 'ব'-এর মতো। সাধারণত নদীর মোহনায় পলি জমা হয়ে নানান আকৃতির যে ভূমিরূপ গঠিত হয়, তাকে বদ্বীপ বলে।

বদ্বীপ

নদীর নিম্ন প্রবাহে যখন স্রোতের বেগ খুবই হ্রাস পায়, তখন নদীর মুখেই তলানি সঞ্চিত হয়ে চর জেগে ওঠে। ফলে নদী প্রবাহ বাধা পেয়ে জেগে ওঠা চরের দুই প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে করে চরের দুই প্রান্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ত্রিকোণাকার মাত্রাহীন 'ব' অক্ষরের আকৃতি প্রাপ্ত হয়। এ কারণে একে বদ্বীপ বলা হয়।

বদ্বীপ গঠনের নিয়ামক

পৃথিবীতে অসংখ্য নদী রয়েছে। কিন্তু সব নদীতে বদ্বীপ গঠিত হয় না। বদ্বীপ গঠিত হওয়ার জন্য কিছু অনুকূল অবস্থার প্রয়োজন।নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো:

১/নদীর মোহনায় সাগর গভীরতা কম হওয়া প্রয়োজন।

২/নদী পানি তলানি বোঝার পরিমাণ বেশি থাকতে হবে।

৩/নদী গতিপথে হ্রদের অনুপস্থিতি প্রয়োজন।

৪/নদীর মোহনায় জোয়ার-ভাটার প্রাবাল্য কম থাকা প্রয়োজন।

৫/প্রশস্ততা বিশিষ্ট একাধিক উপনদী থাকলে বদ্বীপ সংগঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৬/নদীর মোহনা যদি স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত ও সমুদ্র বায়ু দ্বারা প্রভাবিত হয়, তবে নদীতে বদ্বীপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়।

উপসংহার

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, কোন নদীর মোহনায় যদি উপযুক্ত অনুকূল অবস্থা বিরাজ করে তবে সেখানে বদ্বীপ গঠিত হবে। আজকের আর্টিকেলে বদ্বীপ গঠনের নিয়ামক সমূহ বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url